নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের বৃহৎ ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দৈনিক হাজিরা (কাজ নাই, মজুরী নাই) ভিত্তিক ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়ায অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডিসহ) ৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শোকজ করেছে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত জামালপুর।
মামলার বিবাদীরা হলেন, যমুনা সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি আবু সালেহ মোহা. মোসলেহ উদ্দিন, মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও উপমহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন, সদস্য যথাক্রমে ডুয়েট যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান, মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন) মইনুল ইমরান, মহাব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ) ইকবাল হোসেন, উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) আব্দুল হামীম, জনতা ব্যাংক তারাকান্দি শাখার ব্যবস্থাপক এ আর এম রেদুয়ানুর
রহমান ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল-মমিন আউটসোর্সিং সার্ভিসেস লিমিটেড।
যমুনা সার কারখানার নিবন্ধিত
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এ এন এন্টারপ্রাইজের মামলার প্রেক্ষিতে কেন অস্থায়ী ও অন্তরবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা আদেশ প্রদান করা হবে না মর্মে সিনিয়র সহকারী জজ আদালত জামালপুর গত ১৭ এপ্রিল একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।
কারখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, টেন্ডার প্রক্রিয়ার উপর চলমান মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় কারখানার স্বার্থে আউটসোর্সিং টেন্ডার বাতিল করে প্রচলিত নিয়মে জেএফসিএলের বিভিন্ন বিভাগ/শাখায় নানাবিধ কাজের জন্য সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে (কারখানা চলাকালীন ২৩৩ জন এবং কারখানা বন্ধকালীন ১৫৯ জন) বিভিন্ন ক্যাটাগরির দৈনিক ভিত্তিক শ্রমিক কর্মচারী ( কাজ নাই, মজুরী নাই ভিত্তিতে) সরবরাহ করার জন্য গত ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে দরপত্র আহ্বান করেন যমুনা সার কারখানা কর্তৃপক্ষ। উক্ত দরপত্রের ভিত্তিতে ১২ জন ঠিকাদার দরপত্রে অংশগ্রহন করেন। পরবর্তী সময়ে দরপত্র যাচাই-বাছাই শেষে মেসার্স এ এন এন্টারপ্রাইজ চরপাড়া, তারাকান্দি সরিষাবাড়ী, জামালপুরের কমিশন/উদ্বৃত্ত রেট ১৬.০০ টাকা যা প্রাক্কলিত কমিশন/উদ্বৃত্ত রেটের সমান হওয়ায় দরপত্রটি কারিগরিভাবে মূল্যায়ন করা হয় এবং উক্ত দরপত্রটি গ্রহনযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
অপরদিকে মেসার্স আল-মমিন আউটসোর্সিং সার্ভিসেস লিঃ হাতিরপুল, ঢাকা ১২০৫ এর শিডিউলে উল্লিখিত শর্তানুযায়ী প্রয়োজনীয় দলিলপত্রাদি সঠিক থাকলেও প্রতিদিন জনপ্রতি ৮ ঘন্টা কাজের জন্য কমিশন/উদ্বৃত্ত রেট শিডিউল মোতাবেক প্রদান না করে ৫ শতাংশ এক মাসের মূল বেতনের উপর শতকরা ৫ শতাংশ দাখিল করেছেন যা শিডিউলে উল্লিখিত কমিশন রেট অনুযায়ী যথাযথভাবে দাখিল করা হয়নি। একজন শ্রমিকের আট ঘন্টা কাজের জন্য কমিশন রেট দাড়ায় ২৫ টাকা যা প্রাক্কলিত কমিশন রেটের চেয়ে ৯ টাকা বেশী।
এ বিষয়ে মামলার বাদী মেসার্স এ এন এন্টারপ্রাইজের প্রোঃ মোঃ রাশেদুজ্জামান লিটন ফকির জানান, আমি উক্ত দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী দরপত্র দাখিল করি। যাচাই-বাছাই শেষে সর্বনিম্ন দরপত্র হিসাবে বিবেচিত হই এবং টেন্ডার কমিটি বিগত ১ মার্চ ২০২৫ হতে ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৭ তারিখ পর্যন্ত আগামী ২৪ মাসের জন্য কার্যাদেশ প্রদানের জন্য সুপারিশ করেন দরপত্র যাচাই-বাচাই কমিটি। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আমার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে কার্যাদেশ না দিয়ে তালবাহানা করে সময়ক্ষেপন করতে থাকে কারখানা কর্তৃপক্ষ । আমি গত ১০ এপ্রিল টেন্ডার কমিটিকে কার্যাদেশ প্রদানের অনুরোধ করলে কমিটি আমাকে মৌখিকভাবে কার্যাদেশ দিবেনা বলে জানান। মামলার বাদী আরো বলেন, ‘আমি জানতে পারি টেন্ডার কমিটি গোপনে আল- মমিন আউট সোর্সিং সার্ভিস লিঃ কে কাজ দেওয়ার পায়তারা করছে, তাই আমি বাধ্য হয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠান ও কারখানার টেন্ডার কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনের অর্ডার ৩৯ রুল ১/২ ধারার বিধান মতে ১-৮ নং বিবাদীগণের বিরোদ্ধে অস্থায়ী ও অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার চেয়ে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত জামালপুরে মামলা দায়ের করি।